বরাবর,
মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয়,
ও মাননীয় সচিব মহোদয়,
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়,
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
জনাব,
আসসালামু আলাইকুম।
আপনার সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার নিমিত্তে জানাচ্ছি যে, আমি অধ্যাপক মুহম্মদ শাহ আলম,
সদস্য,বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম,ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক মনোনীত জাতীয় সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী।
১১৩, পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা–দশমিনা) নির্বাচনী এলাকা থেকে কথা বলছি। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গলাচিপা এলাকায় একটি মাইকিং এর মাধ্যমে জানিয়েছে যে, তাদের জমিতে থাকা অবৈধ বা লিজপ্রাপ্ত হয়ে নির্মিত অবকাঠামো আগামী ২৬ মে ২০২৫ এর মধ্যে অপসারণ না করা হলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত বন্দর, বাজার ও আবাসিক এলাকাসমূহ:
গলাচিপা পৌরসভার ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াপদায় থাকা বসতি অবকাঠামো, উলানিয়া বন্দর ও ডাকুয়া ব্রিজ বাজার।
আমি ভুক্তভোগী জনসাধারণের পক্ষে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাদের সদয় দৃষ্টিতে আনতে চাই:
১. বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া উচ্ছেদ:
সংশ্লিষ্ট পরিবার ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস বা ব্যবসা করছেন। হঠাৎ উচ্ছেদের ফলে তারা চরম মানবিক বিপর্যয়ে পড়বেন।
২. প্রয়োজন বিকল্প পুনর্বাসন পরিকল্পনার:
যেকোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে মানবিক দিক বিবেচনায় পুনর্বাসনের জন্য একটি সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
৪.সমঝোতার ভিত্তিতে সময় প্রলম্বন:
বর্তমান সময়সীমা অত্যন্ত কম। আরও কিছু সময় দিলে মানুষ নিজের মত করে প্রস্তুতি নিতে পারবে এবং প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করা সহজ হবে।
৫. স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও মতামত:
স্থানীয় প্রতিনিধিদের এবং নাগরিক সমাজের মতামত গ্রহণ করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে যাতে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মানবিক বিষয় দুইটিই সমন্বিত হয়।
আমি অনুরোধ জানাই, উন্নয়ন কার্যক্রম যাতে মানবিক এবং অংশগ্রহণমূলক হয়—তা নিশ্চিত করতে আপনারা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এবং সহায়তা প্রদান করবেন।
বিশ্বব্যংকের অর্থ সহায়তায় যেহেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে – তাই বিশ্বব্যাংকের কাছে তাদের বিবেচনার জন্য ক’টা প্রস্তাব।
প্রস্তাবসমূহ :
১.পুনর্বাসন সহ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন
উন্নয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি সমন্বিত পুনর্বাসন পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
২.বাসস্থান সরবরাহ বা অর্থ সহায়তা,
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থানান্তরের জন্য বিকল্প জমি বা অনুদান,
জীবিকা সহায়তা কর্মসূচি (Livelihood Assistance Program)।
২. সমন্বিত সমাজভিত্তিক পুনর্বাসন প্রকল্প (Community-Based Resettlement Plan)
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ভুক্তভোগী ও পাউবোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিন।
৩. অবকাঠামো অপসারণে সময়সীমা ও পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়ন
প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একক ধাক্কায় উচ্ছেদের পরিবর্তে ধাপে ধাপে অপসারণ ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের অনুরোধ করুন।
এতে সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও মানবিক ক্ষতির আশঙ্কা কমে যাবে।
৪. সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন (Social Impact Assessment) পুনর্মূল্যায়নের অনুরোধ:
)প্রকল্প এলাকায় নতুন করে সামাজিক ও মানবিক প্রভাব মূল্যায়ন (SIA) পরিচালনা করে সেই অনুযায়ী প্রকল্পে সমন্বয় আনার প্রস্তাব দিন।
এটি বিশ্বব্যাংকের নিজস্ব নীতিমালার (ESF – Environmental and Social Framework) সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
৫. অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ
সকল পক্ষের অংশগ্রহণে একটি জনশুনানি বা পরামর্শ সভা আয়োজন করে তবেই প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি তুলুন।
এতে বিশ্বব্যাংকের “Stakeholder Engagement” নীতিমালার সঠিক বাস্তবায়ন হয়।
উলানিয়া বন্দর সুরক্ষার জন্য বিকল্প প্রস্তাব:
১। ওয়াপদা ভেরিবাধের মাত্র ৭০০ বা ৮০০ মিটার দূরে নদীর তীর ঘেষে নতুন ভেরিবাধ নির্মাণ করা যায়।
তাতে ভেরিবাধের বাইরে থাকা প্রায় ২৫০০ বসতি ঘর ও দোকান বন্যা ও দূর্যোগের সময় সুরক্ষা পাবে।
কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
উপরন্তু বন্দর সম্প্রসারিত হবে।
২। বর্তমান উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যতটুকু জায়গা দরকার –
সেই জায়গা ছাড়া বাকি জমিতে বিদ্যমান ব্যবসায়ীদেরকে প্রতিস্থাপিত করা যায়।
প্রোক্ত প্রস্তাবাবলী আপনার সদয় বিবেচনায় নিলে আমরা স্বল্প আয়ের মানুষগুলো পরিবার নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে জীবনযুদ্ধে যুক্ত থাকতে পারবো।
বিনীত –
মুহম্মদ শাহ আলম।